বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জয়পুরহাটে চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ শিক্ষার্থীদের 

  • রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট    
  • ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১০:৫৭

জয়পুরহাটের একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে প্রতিষ্ঠানটির আবাসিক শিক্ষার্থীদের ২২ জনকে বেত্রাঘাত করার পর সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হয় বলে জানিয়েছেন জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশেদুল ইসলাম।

জয়পুরহাট জেলা শহরের প্রফেসরপাড়া এলাকায় নর্থ বেঙ্গল মডেল স্কুল অ্যান্ড ক্যাডেট একাডেমি নামের ওই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ দিন ধরে আবাসিক ও অনাবাসিক ব্যাচে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হচ্ছে। পাশ্ববর্তী কয়েকটি জেলার অনেক শিক্ষার্থীও প্রতিষ্ঠানটিতে লেখাপড়া করতে আসে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক আশিকুর রহমান, এমদাদ হোসেন, আবুল বাশার ও ওমর ফারুক শিক্ষার্থীদের অমানবিক মারধর করে আসছিলেন।

এর মধ্যে গত শুক্রবার রাতে গান গাওয়া ও টেলিভিশন দেখার সময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র আবাসিক শিক্ষার্থীদের ২২ জনকে বেত্রাঘাত করেন তারা। পরে রাতেই এক শিক্ষার্থী পালিয়ে বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়।

ওই অভিভাবক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে অভিযোগ জানান । তখন অন্য শিক্ষার্থীরাও তাদের উপর দীর্ঘদিন ধরে চলা অমানবিক ও ধারাবাহিক নির্যাতনের বিষয়টি তাদের পরিবারকে জানায়।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রেজাউন জান্নাত বলেন, সকালে শিক্ষক আসতে দেরি করায় আমি গান গাইছিলাম। হঠাৎ এমদাদ স্যার এসে আমাকে বেদম মারধর করেন।

একই শ্রেণির শিক্ষার্থী আনাম হাসান বলেন, একবার স্যার ক্লাসে ঢুকে ‘হু আর ইউ’ বলেই তাদের মারতে শুরু করেন। কেন মারা হলো তাও তারা জানেন না।

শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, এক বন্ধুর সঙ্গে কথাকাটাকাটির ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদেরকেও পেটানো হয়েছে।

শিক্ষার্থী সোহান ফারদিন অভিযোগ করে বলেন, আমি বেতন কিছুটা কম দেই। এজন্য স্যার আমাকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মারধর করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এসব ব্যাপারে পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের কাছে অভিযোগ দিলেও তিনি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি প্রধান শিক্ষক।

অভিভাবকরা বলেন, তাদের বাচ্চাদের শিক্ষকরা শাসন করতেই পারেন কিন্তু ধারাবাহিক নির্যাতন মেনে নেওয়ার মত না। তারা খবর পেয়ে দ্রুত এসে দেখেন তাদের বাচ্চাদের শাসন নয়, হিংস্রতার সঙ্গে মারধর করা হয়েছে। প্রায়ই এভাবে নির্যাতন চলে। আমরা শিক্ষার্থী নির্যাতনের সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।

এদিকে অভিযোগ ওঠা শিক্ষকরা পালিয়ে গেলেও অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে পুলিশ গিয়ে পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে থানায় নিয়ে যায়। পরে মুচলেকা দিয়ে তিনি বাসায় ফিরে যান বলে জানান জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তামবিরুল ইসলাম।

নর্থ বেঙ্গল মডেল স্কুল অ্যান্ড ক্যাডেট একাডেমির পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশেদুল ইসলাম বলেন, আঘাতকারীদের ঘটনাস্থলে গিয়ে না পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যায়নি। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধান জড়িত শিক্ষকদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিবেন মর্মে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন। এছাড়া একটা তদন্ত কমিটিও গঠন করে দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে কমিটির সুপারিশে নিয়মিত মামলা করা যাবে।

এ বিভাগের আরো খবর